আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত। সম্প্রতি চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর বেঁচে থাকার আশঙ্কা আর নেই। মৃত্যুর পর সন্তানদের দেখভাল কে করবে! দুশ্চিন্তায় ভুগতে ভুগতে চরম পদক্ষেপ করলেন এক যুবক। দুই সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন তিনি। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের দেবভূমি দ্বারকা জেলায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যায় লাম্বা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। কল্যাণপুর থানার পুলিশ আধিকারিক টিসি প্যাটেল জানিয়েছেন, ৪০ বছর বয়সি এক যুবক তাঁর দুই পুত্রসন্তানকে বিষ খাইয়ে খুন করেন। এরপর বাড়িতেই আত্মঘাতী হন ওই যুবক। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম, মেরামান ভাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। গত পাঁচ বছর ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন তিনি। তবে সম্প্রতি তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। বাঁচার আশাও ছিল ক্ষীণ। এই পর্যায়েই খুদে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন যুবক। তাঁর অবর্তমানে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার মাঝেই চরম পদক্ষেপ করার পরিকল্পনা করেন। 

ঘটনার দিন মেরামানের স্ত্রী অফিসে কাজ করছিলেন। বাড়িতে দুই খুদে সন্তানকে নিয়ে একাই ছিলেন তিনি। সেই সময়েই পাঁচ বছরের মেয়ে ও তিন বছরের ছেলের খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন। দুই খুদে সন্তানের মৃত্যু নিশ্চিত হতেই সেই বিষ মেশানো খাবার তিনি নিজেও খান। বাড়ি থেকে দুই খুদে সন্তান সহ বাবার মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। ঘটনাটি ঘিরে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 

আরও পড়ুন: সার্ভিস রিভালভার দিয়েই পরপর গুলি! ফাঁকা বাড়ি থেকে উদ্ধার হরিয়ানার শীর্ষ পুলিশকর্তার রক্তাক্ত দেহ

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগে আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল।‌ তিন বছরের কোলের মেয়েকে ঘুমপাড়ানি গান শুনিয়েছিল মা। মেয়ে ঘুমিয়ে পড়তেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হল। ঘুমন্ত শিশুকে কোলে নিয়ে লেকের ধারে ঘুরতে চলে যান‌। এরপর সেই ঘুমন্ত শিশুকন্যাকে ভাসিয়ে দেন লেকের জলে। লেকে ডুবে শেষ হয়ে গেল তিন বছরের শিশুটি। এরপরই ঘাতক মা বললেন, তাঁর শিশুকন্যা নিখোঁজ! 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের আজমেরে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘাতক তরুণীর স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। আজমেরে প্রেমিকের সঙ্গে থাকতেন‌। তাঁর সঙ্গেই থাকতে তিনি বছরের মেয়ে‌। কিন্তু প্রেমিক তাঁর মেয়েকে পছন্দ করতেন না। বারবার সন্তানকে নিয়ে খোঁটা দিতেন। এই পরিস্থিতিতে রাগের মাথায় মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করেন তরুণী। 

পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে ওই লেকের ধারে যুগলকে দেখা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করতেই অঞ্জলি নামের তরুণী জানান, তিনি বাড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে মেয়েকে আর খুঁজে পাচ্ছেন না। বহু খোঁজাখুঁজির পরেও মেয়ের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। 

এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতেই তরুণীর কোলে তাঁর মেয়েকে দেখা গিয়েছিল। মেয়েকে নিয়ে তিনি লেকের ধারেও যান। এরপর রাত দেড়টা নাগাদ মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে তরুণীকে। তখনই সন্দেহ হয় পুলিশের। বুধবার সকালে লেকের ধারে শিশুকন্যার নিথর দেহ দেখতে পায় পুলিশ। দীর্ঘ জেরার পর তরুণী কান্নায় ভেঙে পড়ে জানান, তিনিই ওই লেকে সন্তানকে ভাসিয়ে দেন। 

পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে অঞ্জলি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন। ঘটনার দিন রাত দুটো নাগাদ আকাশ নামের তাঁর প্রেমিককে সন্তানের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি জানিয়েছিলেন। এই ঘটনায় আকাশ জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।