তুলোর বলের মতো নরম শরীর, ডাগর চোখে অফুরন্ত কৌতূহল। বাড়িতে নতুন কুকুরছানা আসার আনন্দ যেমন বাঁধনছাড়া, তেমনই তার কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় আসল চিন্তা। এ বার একে বড় করতে হবে কীভাবে? বসার ঘরের নতুন গালিচা বা বাবার প্রিয় চপ্পল- সবই যে তার কাছে খেলার সামগ্রী! বিশেষজ্ঞদের মতে, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শুরু থেকে কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই আপনার ছোট্ট বন্ধুটি হয়ে উঠবে বাড়ির সেরা সঙ্গী। ধৈর্য এবং ভালবাসাই এই প্রশিক্ষণের মূল মন্ত্র।
সদ্য কেনা কুকুরছানাকে ট্রেনিং দেওয়ার কিছু সহজ উপায় নিচে আলোচনা করা হলো:
১। প্রথমেই শৌচকর্মের পাঠ: এটি সবচেয়ে জরুরি প্রশিক্ষণ। ছানাটিকে দিনের নির্দিষ্ট সময়ে, বিশেষ করে ঘুম থেকে ওঠার পর, খাওয়ার পর এবং খেলার পর বাড়ির বাইরে বা নির্দিষ্ট জায়গায় (যেমন ব্যালকনিতে রাখা পটি ট্রে) নিয়ে যান। সঠিক জায়গায় শৌচকর্ম করলে সঙ্গে সঙ্গে তার প্রশংসা করুন, আদর করুন বা ছোট কোনও পুরস্কার (ট্রিট) দিন। বাড়িতে ভুল জায়গায় করে ফেললে বকাঝকা বা মারধর করবেন না। এতে সে ভয় পাবে। বরং জায়গাটি ভাল করে পরিষ্কার করে দিন যাতে গন্ধ না থাকে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
২. সামাজিকীকরণ অত্যন্ত জরুরি: একটি কুকুরছানার মানসিক বিকাশের জন্য সামাজিকীকরণ খুব গুরুত্বপূর্ণ। তিন মাস বয়স থেকেই তাকে বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচয় করান। বাড়ির অন্য সদস্য, বন্ধু-বান্ধব, অন্য কুকুর (যাদের টিকা দেওয়া আছে) এবং বিভিন্ন ধরনের শব্দের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটান। এর ফলে বড় হয়ে সে ভীতু বা অতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হবে না।
৩. কামড়ানোর অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ: ছোট ছানারা খেলতে খেলতে হাতে বা পায়ে আলতো কামড় দেয়, যা 'নিপিং' নামে পরিচিত। এই অভ্যাস গোড়া থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। সে যখনই আপনাকে কামড়াতে চাইবে, তখনই কঠোর স্বরে ‘না’ বলুন এবং তার মুখ থেকে হাত সরিয়ে নিন। পরিবর্তে তাকে চিবানোর জন্য উপযুক্ত খেলনা দিন। এতে সে বুঝবে, মানুষের চামড়া কামড়ানোর জায়গা নয়।
৪. সাধারণ নির্দেশ শেখানো: প্রশিক্ষণ মানেই খেলার ছলে শেখা। ‘বোসো’, ‘থাকো’, ‘এসো’—এই ধরনের ছোট ছোট নির্দেশ শেখানো শুরু করুন। প্রতিটি সেশন অল্প সময়ের (৫-১০ মিনিট) জন্য রাখুন। সঠিক ভাবে নির্দেশ পালন করতে পারলে তাকে উৎসাহ দিন, পুরস্কার দিন। প্রশংসা পেলে সে নতুন জিনিস শিখতে আরও আগ্রহী হবে।
৫. ধৈর্যের বিকল্প নেই: মনে রাখবেন, প্রতিটি ছানার শেখার গতি আলাদা। আপনার পোষ্যটি হয়তো কোনও কিছু শিখতে একটু বেশি সময় নিচ্ছে। হতাশ হবেন না। বকাঝকা করলে প্রশিক্ষণের পুরো প্রক্রিয়াটিই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তার সঙ্গে সময় কাটান, খেলুন। প্রশিক্ষণ আসলে আপনার এবং  পোষ্যের মধ্যে বোঝাপড়া ও ভালবাসার এক সেতুবন্ধন। এই পথ ধৈর্য ধরে পার করতে পারলেই আগামীর দিনগুলো আনন্দে ভরে উঠবে।