সোমবার ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

দেশ | কার্তারপুর বনাম কালানৌর: সম্রাট আকবর এবং ইতিহাসের বিস্মৃতি

সৌরভ গোস্বামী | ৩১ আগস্ট ২০২৫ ১৬ : ১৫Sourav Goswami

আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি রাভি নদীর ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তানের কার্তারপুর সাহিব গুরুদ্বারা, যেখানে শিখ ধর্মের প্রবর্তক গুরু নানক চিরনিবাস লাভ করেছিলেন। তবে এই স্থানের স্মৃতিচারণ অসম্পূর্ণ থেকে যায় যদি মনে না করা হয় ভারতের পাঞ্জাবের গুরদাসপুর জেলার আরেকটি ঐতিহাসিক শহর কালানৌরকে। মাত্র ২০ কিলোমিটারের ব্যবধানেই দুটি স্থান, অথচ ভারতীয় ঐতিহ্যে তাদের তাৎপর্য যেন সম্পূর্ণ ভিন্ন দুই দিকের প্রতীক।

কার্তারপুরকে ঘিরে আছে সমতার বাণী, সেবার সংস্কৃতি ও প্রার্থনার ধারাবাহিকতা। অন্যদিকে, কালানৌর বহন করছে সাম্রাজ্যিক মহিমার সূচনার স্মৃতি—এখানেই ১৫৬৫ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি মাত্র ১৩ বছরের জালালউদ্দিন মুহাম্মদ আকবরকে সম্রাট হিসেবে অভিষেক করা হয়েছিল। এই অভিষেক মঞ্চ তখত-ই-আকবরী আজ ইতিহাসের পাতায় অম্লান হলেও বাস্তবে বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাচ্ছে।

গুরু নানক ১৫৩৯ সালে পরলোকগমন করেছিলেন, অর্থাৎ আকবরের অভিষেকের প্রায় ১৭ বছর আগে। তবুও দুটি উত্তরাধিকার যেন সমান্তরালভাবে চলেছে—নানকের আধ্যাত্মিক বাণী সমাজে সমতা ও ভ্রাতৃত্বের চেতনা ছড়িয়েছে, আর আকবর সাম্রাজ্যের শক্তি সংহত করে ভারতীয় ইতিহাসে নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন।

আরও পড়ুন: বাংলা ভাষাভাষীদের আটক প্রসঙ্গে কেন্দ্রকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

আকবর কেবল মুঘল শক্তির প্রতীক ছিলেন না; তিনি নতুন উদীয়মান শিখ ধর্মের প্রতিও দেখিয়েছিলেন বিরল সহনশীলতা। তৃতীয় গুরু অমর দাসের আমন্ত্রণে গোবিন্দওয়ালে লঙ্গরে বসে সমতার বার্তা মেনে সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভোজন করেছিলেন সম্রাট। শাসকের অহঙ্কার পাশে রেখে আধ্যাত্মিক সমতার কাছে মাথা নোয়ানোর এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত।

আকবর আশপাশের গ্রামগুলিকে রাজস্ব ছাড় দেন, এমনকি গুরু রামদাসকে ভূমি প্রদান করেন, যেখানে পরে খনন শুরু হয়েছিল অমৃত সরোবরের—যার চারপাশে গড়ে ওঠে রামদাসপুর, আজকের অমৃতসর। এই ঘটনার মাধ্যমে মুঘল শাসক ও শিখ ধর্মের মধ্যে এক সৌহার্দ্যময় সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল, যদিও পরবর্তী মুঘল সম্রাটদের নীতিতে তা বদলে যায়।

কার্তারপুর আজও জীবন্ত বিশ্বাসের কেন্দ্র। ২০১৯ সালে করিডর খোলার পর ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা সেখানে গিয়েছেন, যদিও বর্তমানে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর কারণে তা বন্ধ। বারবার রাভির বন্যায় ধ্বংস হলেও ভক্তরা প্রতিবারই গুরুদ্বারাকে পুনর্নির্মাণ করেছেন। এটি কেবল ধর্মীয় স্থাপনা নয়, বরং শিখ আত্মপরিচয় ও সম্প্রদায়সেবার প্রতীক।

অন্যদিকে, কালানৌরের তখত-ই-আকবরী প্রায় বিস্মৃত। শহরের মানুষজনও এর অবস্থান সম্পর্কে উদাসীন। সর্ষে ক্ষেত, বাড়িঘর, দোকান আর আবর্জনার স্তূপের মাঝেই পড়ে আছে ঐতিহাসিক স্থাপত্যটি। প্রত্নতত্ত্ব দপ্তরের  একটি ছোট ফলক ছাড়া সেখানে এর গুরুত্ব বোঝানোর কোনও চিহ্ন নেই। অথচ এখান থেকেই আকবর শুরু করেছিলেন এক দীর্ঘ শাসনকাল, যার প্রভাব ভারতীয় প্রশাসনিক কাঠামো ও রাজনীতিতে আজও পরোক্ষভাবে টিকে আছে।

তখত-ই-আকবরী মূলত লাল ইটের একটি প্রায় ১১ বর্গমিটারের মঞ্চ। কেন্দ্রে একটি বর্গাকার জলাধার, চারপাশে ক্ষুদ্র ট্যাঙ্ক, যেখানে জল  ভরে প্রতিফলনের মাধ্যমে অভিষেককে জাঁকজমকপূর্ণ করে তোলা হয়েছিল। ইতিহাসবিদদের মতে, এই সরল কিন্তু সুবিন্যস্ত স্থাপত্য আকবরের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও কর্তৃত্বের প্রতীক। কিন্তু আজ তা গ্রামীণ জীবনের ছায়ায় ঢাকা পড়ে আছে।

দুটি স্থান তুলনা করলে ভারতীয় ঐতিহ্যের বৈপরীত্য স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কার্তারপুর আজও শিখ সম্প্রদায়ের জন্য প্রাণবন্ত ভক্তির কেন্দ্র, যেখানে সমতা, সেবা আর ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা প্রবাহিত। আর কালানৌর, যেখান থেকে মুঘল শক্তির নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছিল, তা আজ নিঃশব্দে ভগ্নাবশেষে পরিণত—ইতিহাসের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে কেবল বইয়ের পাতায় টিকে আছে।

কার্তারপুর আজও ভক্তির নবজাগরণের প্রতীক, আর কালানৌর কেবল বিস্মৃত মহিমার চিহ্ন। এই বৈপরীত্য আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ভারতের অতীত কেবল একমুখী নয়—এখানে সমান্তরালে গড়ে উঠেছে আধ্যাত্মিক বিশ্বাস, সাম্রাজ্যিক ক্ষমতা, এবং সময়ের সাথে সাথে তাদের স্মৃতির ভিন্ন ভিন্ন পরিণতি।


নানান খবর

এবার রুপো বন্ধক রেখেও মিলবে ঋণ, জেনে নিন খুঁটিনাটি

হ্যালোউইনের সন্ধ্যায় ‘সবথেকে মিষ্টি ভ্যাম্পায়ার’-এর সন্ধান দিলেন আয়ুষ্মান, দেখলে মন গলবে আপনারও

কলকাতায় ম্যানহোল থেকে পচা গলা দেহ উদ্ধার! ঘটনা ঘিরে চরম চাঞ্চল্য, আতঙ্কে এলাকাবাসী

নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির দাবিতে কমিশনকে ১৩ দফা চিঠি মহম্মদ সেলিমের

কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে সুমন মৈত্রর 'অ২', ছবিতে ঋত্বিক-যোগ প্রসঙ্গে কী জানালেন পরিচালক?

ভারত জিতলে জেমাইমার গিটারের সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গান গাওয়ার আবদার জুড়লেন সানি

৪ নভেম্বর থেকে এসআইআর ক্যাম্প তৃণমূলের, বিএলও-কে এক মিনিটও একা না ছাড়া যাবে না, ভার্চুয়াল বৈঠকে নির্দেশ অভিষেকের

ছিলেন ক্রিকেটার, অধিনায়ক ও সাংসদ, এবার মন্ত্রীও হয়ে গেলেন আজহার

গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল সেবনের ফল মারাত্মক, পরিবর্তনে হতে পারে শিশুর মস্তিষ্কের রসায়নের

পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টি, দুধিয়ার হিউম পাইপ সেতুর নিচে ফুলে উঠছে বালাসন খোলা নদী, বাড়ছে বন্যার আশঙ্কা

রণবীরের স্ত্রী হয়েও কাপুর পরিবারে একঘরে আলিয়া? এক পোস্টে তোলপাড় চারদিক, শুরু নয়া বিতর্ক

বাঙালিয়ানাকে দৃঢ়ভাবে হাতিয়ার করেই বদলাচ্ছে ‘হইচই’, ‘বোল্ডলি বাঙালি’-র উদ্যোগে সামিল কোন কোন তারকা?

সোনামণিকে 'স্পেশাল' তকমা দিলেন প্রতীকের মা! খুব তাড়াতাড়িই প্রেম পরিণতি পেতে চলেছে জুটির?

‘‌কোচের একটা কথাই বদলে দিয়েছিল মানসিকতা’‌, অকপট হরমন

ধস নামালেন জস, মেয়েদের ইতিহাস গড়ার পরের দিনই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ল্যাজেগোবরে হল টিম ইন্ডিয়া

পাকিস্তানের পাশে চীন, সমস্যায় পড়তে পারে ভারত

ভারত–অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে রেকর্ডের ছড়াছড়ি, জেমাইমাই গড়লেন একগুচ্ছ নজির 

হ্যালোইনের ভূতে কলকাতা কাঁপে! বিদেশি হুল্লোড় শিশুমনের আলো না আঁধার?

এখনও কাপ পাননি সূর্যরা, এরই মধ্যে আরও একটি এশিয়া কাপ চলে এল

ভারতের কাছে হারের পরেই অবসরের ইঙ্গিত অজি অধিনায়কের

যে মেয়েটা বিয়ে না করে ফুটবলার হতে চায়, তার চোখে সন্ধ্যাতারা হয়ে ফুটুন জেমাইমা

নিউরো সার্জারিতে নতুন দিশা, ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজিতে লাগছে না কাটাছেঁড়া, বিনা অস্ত্রোপচারেই সারছে মস্তিষ্কের জটিল রোগ

২০০২ সালের ভোটার তালিকা খুঁজছেন? রাজ্যের সিইও দপ্তরের ওয়েবসাইট নিষ্ক্রিয়, তাহলে পাবেন কোথায়? রইল হদিশ

‘ইন্ডাস্ট্রির বৃহত্তর স্বার্থের জন্য নিজের স্বার্থের কথা ভাবলে চলে না’ বড়দিন থেকে নিজের ছবি পিছনো নিয়ে আর কী বললেন শিবপ্রসাদ?

সোশ্যাল মিডিয়া