নিতাই দে, আগরতলা: আগরতলায় হাড়হিম করা ঘটনা। খুন করে মৃতদেহ ট্রলি ব্যাগে ঢুকিয়ে আইসক্রিমের ডিপ ফ্রিজে রেখে দিল খুনিরা। জানা গেছে, ৮ জুন রবিবার থেকে নিখোঁজ ছিল রাজধানী আগরতলার ইন্দ্রনগরের কবরখোলা এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম (‌২৪)‌। চারদিন পর ওই যুবকের দেহ উদ্ধার হয় ত্রিপুরার ধলাই জেলার গন্ডাছড়ার একটি দোকানের আইসক্রিমের ফ্রিজ থেকে। প্রসঙ্গত, ৮ তারিখ নিখোঁজ হওয়ার পর আগরতলা এনসিসি থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল শরিফুল ইসলামের পরিবারের পক্ষ থেকে। পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে মঙ্গলবার দিবাকর সাহা নামে আগরতলার এক চিকিৎসককে আটক করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে ঘটনার সত্যটা জানতে পারে পুলিশ। এরপরই মঙ্গলবার রাতে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চিকিৎসকের মা–বাবা সহ ছয় জনকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে মৃতদেহটি গন্ডাছড়ার ওই চিকিৎসকের বাবার দোকানের আইসক্রিমের ডিপ ফ্রিজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার পুলিশ সুপার ডা: কিরণ কুমার জানিয়েছেন প্রেমঘটিত কারণে এই খুনের ঘটনা। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শরিফুল এক যুবতীর সঙ্গে প্রেম করত। কিন্তু সেই সম্পর্ক কেটে যায়। এরপরই ওই তরুণী সম্পর্কে ‘‌ভাই’‌ চিকিৎসক দিবাকর সাহার সঙ্গে প্রেম শুরু করেন। যা মানতে পারেনি শরিফুল। পুলিশের অনুমান, কাঁটা সরাতেই শরিফুলকে খুন করেছে ওই চিকিৎসক। 

তদন্তে জানা গেছে, চিকিৎসক দিবাকর সাহা ৮ জুন রাতে শরিফুলকে ফোন করে উপহার দেওয়ার অছিলায় আগরতলার দক্ষিণ ইন্দ্রনগরে জয়দীপ দাসের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই ছিল প্রেমিকা নবনীতা দাস, জয়দেব দাস ও অনিমেষ যাদব। অভিযোগ, জয়দীপ দাসের বাড়িতেই গলা টিপে শরিফুলকে হত্যা করা হয়। ঘটনার দু’‌দিন আগে বাজার থেকে একটি ট্রলি ব্যাগ কিনে এনেছিল অভিযুক্ত চিকিৎসক। সেই ট্রলিতেই খুনের পর দেহটি ঢুকিয়ে রাখা হয়। ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ ৯ জুন অভিযুক্ত চিকিৎসকের বাবা দীপক সাহা ও মা দেবিকা সাহা একটি গাড়ি করে গন্ডাছড়া থেকে আগরতলার জয়দীপ দাসের বাড়িতে আসেন। তারপর চিকিৎসকের বাবা ও মা ট্রলি ব্যাগে লুকানো মৃতদেহটি গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে তাদের পানের দোকানের আইসক্রিমের ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে আগরতলায় আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাতে ছয় জনকে আটক করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পর গোটা বিষয়টি জানা যায়। বুধবার সন্ধেয় মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তে পাঠায়। ওইদিন রাতেই মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের পর পুলিশ পরিবারের হাতে তুলে দেয়।