আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোমবার গভীর রাতে কোচবিহার শহরের অদূরে চিলকিরহাট সংলগ্ন এলাকায় ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বেসরকারি গাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে গিয়ে সোজা জলাশয়ে পড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় গাড়িতে থাকা চারজন পুরুষ যাত্রীর। তবে  প্রাণে বেঁচে যান গাড়িতে থাকা একমাত্র মহিলা যাত্রী। তিনি বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ধনঞ্জয় বর্মন (২৮), অমিত দাস (২৫), সঞ্জয় দাস (২৫) এবং পার্থ দাস (২৪)। তাঁরা সকলেই কোচবিহারের দেওয়ানহাট মোয়ামারী এলাকার বাসিন্দা এবং ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। সম্পর্কে পরস্পর পরস্পরের খুড়তুতো ভাই। ওই গাড়ির একমাত্র মহিলা যাত্রী মৌমিতা দাস সম্পর্কে জানা গিয়েছে, তিনি মৃত চার যুবকের দিদি। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা এবং পুলিশ মিলে তাঁকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যান।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেওয়ানহাট থেকে গাড়ি ভাড়া করে তাঁরা একটি নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে যাচ্ছিলেন। গভীর রাতে কোতোয়ালি থানার চিলকিরহাট ও চান্দামারির মাঝামাঝি জায়গায় হঠাৎ চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে গাড়িটি রাস্তা ছেড়ে সোজা পাশের জলাশয়ে নেমে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটি ডুবে গেলে যাত্রীরা বেরনোর সুযোগ পাননি।

আরও পড়ুন: অফিস টাইমে সন্তোষপুর স্টেশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, বজবজ শাখায় ব্যাহত ট্রেন

এই দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে গাড়ির চালক ধনঞ্জয় বর্মনের নাম প্রথমে জানা যায়। তিনি ওই গাড়িরই মালিক এবং দেওয়ানহাট এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অতিরিক্ত গতি এবং রাতের অন্ধকারের কারণে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন। যদিও সঠিক কারণ জানতে পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য জানান, 'আমরা ইতিমধ্যেই চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। সেগুলি ময়নাতদন্তের জন্য কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালে পাঠানো হয়েছে। বেঁচে যাওয়া মহিলাকে প্রায় অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হবে, যাতে ঘটনার প্রকৃত চিত্র স্পষ্ট হয়।'

স্থানীয়রা  জানান, দুর্ঘটনার শব্দ শুনেই তাঁরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তবে গাড়ি দ্রুত ডুবে যাওয়ায় উদ্ধার কাজে তাঁদের বেগ পেতে হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে উদ্ধারকাজ শুরু করে। এই ঘটনায় গোটা দেওয়ানহাট এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। একসঙ্গে চার যুবকের মৃত্যুতে পরিবার থেকে শুরু করে প্রতিবেশীদের মধ্যে শোকের ছাপ স্পষ্ট।

ভয়াবহ এই দুর্ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল সড়কে গাড়ি চালানোর সময় সচেতনতা ও নিয়ম মেনে চলার প্রয়োজনীয়তার কথা। মাত্র এক মুহূর্তের অসতর্কতাই কেড়ে নিতে পারে  প্রাণ।

এর আগে, ১৩ সেপ্টেম্বর খাস কলকাতায় ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনা ঘটে। শনিবার সাত সকালে ভিআইপি রোডের কেষ্টপুরে একের পর এক বাইকে ধাক্কা মারে পিকআপ ভ্যান। যার জেরে আহত ট্রাফিক এএসআই–সহ পাঁচ জন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটে বাগুইআটি থেকে দমদম পার্কের দিকে যাওয়ার মুখে কেষ্টপুর সিগনালে। দ্রুত গতিতে ছুটে আসা একটি পিকআপ ভ্যান সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক বাইকে ধাক্কা মারে। ধাক্কার অভিঘাতে রাস্তায় ছিটকে পড়ে বাইক আরোহীরা। গাড়ির তলায় চলে যায় এক বাইক আরোহী। গুরুতর আহত হন তিনি। সিগন্যালে ডিউটিরত এক ট্রাফিক পুলিশের এএসআইও আহত হন। মোট আহত হন পাঁচজন। তাঁদের প্রত্যেককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘাতক গাড়িটির চালককে আটক করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয় ঘাতক গাড়িটিকেও।