রবিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পূর্ণ খবর

রাজ্য | পৌষ সংক্রান্তির আবহে ঢেঁকির দেখা মেলে গ্রামে, হুগলির এই বাড়িতেই ভিড় জমান মহিলারা

Pallabi Ghosh | ১৪ জানুয়ারী ২০২৫ ০০ : ৩৬Pallabi Ghosh

মিল্টন সেন, হুগলি: আজও পৌষ সংক্রান্তি এলেই প্রত্যন্ত গ্রাম মনে করিয়ে দেয় সেই প্রাচীন ঐতিহ্যের কথা। বর্তমানে চাল, ডাল, গম থেকে শুরু করে সবরকমের মশলা, সবই গুঁড়ো অবস্থায় বাজারে সহজলভ্য। শহরাঞ্চলে আজও পৌষপার্বণে পিঠে বানানোর চল এখনও সম্পূর্ণ উঠে যায়নি। অধিকাংশ বাড়িতেই পিঠে তৈরির চল রয়েছে। তবে পিঠে বানানোর যাবতীয় সামগ্রী পাওয়া যায় গুঁড়ো করা প্যাকেটবন্দি অবস্থায়। অর্থাৎ গুঁড়ো করার ঝামেলা নেই বললেই চলে। তবে আজও শহর সংলগ্ন একাধিক গ্রামে পৌষ পার্বণে পিঠে তৈরির ক্ষেত্রে ঢেঁকি ব্যবহার করে চাল গুঁড়ো করার সেই প্রাচীন চল অব্যাহত রয়েছে। 

এই সময় বলাগড়ের একাধিক গ্রামে কান পাতলে শোনা যায় ঢেঁকির 'ধুপধাপ' শব্দ। আগে শুধু পৌষ পার্বণ বলে নয়, মাঝে মাঝেই গ্রামগঞ্জের একাধিক বাড়ি থেকে ভেসে আসতো 'ধূপধাপ' ঢেঁকির শব্দ। দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত চলত ঢেঁকি। তবে শীত পড়লে সেই শব্দ বেড়ে যেত। সারাদিন ধরে ঢেঁকিতে চাল গুঁড়ো করার কাজ চলত। আর সেই চালের গুঁড়ো দিয়ে পৌষ মাসের সংক্রান্তিতে তৈরি হতো নানা রকমের পিঠে। তবে এখন সেসব একেবারেই নেই। ঢেঁকির জায়গা দখল করেছে বাজারে সহজলভ্য গুঁড়ো সামগ্রী আর আধুনিক যন্ত্রপাতি। তবে কমবেশি ঢেঁকির দেখা মেলে গ্রামবাংলায়। তেমনই হুগলির বলাগড়ের রুকেশপুর গ্রামে আজও শোনা যায় ঢেঁকির আওয়াজ। 

সারা বছর ঢেঁকি তোলা থাকে। তবে পৌষ মাসের সংক্রান্তির দশ পনেরো দিন আগে ঢেঁকি পুনরায় পাতা হয়। দলবেঁধে গ্রামের মহিলারা চাল গুঁড়ো করার কাজে লেগে পরেন। গোটা গ্রাম উৎসব মুখর হয়ে ওঠে। রুকেশপুর গ্রামের বাসিন্দা আঙুর সাঁতরার বাড়িতে আজও ঢেঁকির প্রচলন রয়েছে। মকর সংক্রান্তি আসছে শুনলেই শুরু হয়ে যায় ঢেঁকিতে চাল কোটার কাজ। একটা সময় ছিল যখন গ্রামের মহিলারা রাত জেগে চাল গুঁড়ো করতেন। সময় লাগত। সঙ্গে প্রয়োজন হতো শারীরিক ক্ষমতার। দু'কেজি চাল গুঁড়ো করতে যেখানে সময় লেগে যেত আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা। সেখানে অনেকেই বর্তমানে বাড়িতে মিক্সচার গ্রাইন্ডারে চাল গুঁড়ো করেন। কেউ আবার বাজার থেকে চালের গুঁড়ো কিনে, কাজ সেরে ফেলেন। 

ঢেঁকি পাতাটাও একটা বড় হ্যাপা। স্থানীয় আঙুর সাঁতরা  জানিয়েছেন, সংক্রান্তির দিন দশেক আগে সেই ঢেঁকি তাঁদের বাড়িতে পুনরায় পাতার কাজ শুরু হয়। প্রথমে ঢেঁকিকে পরিষ্কার করে নেওয়া হয়। তারপর ছোট ছোট "পুয়া" অর্থাৎ কাঠের টুকরো ঢেঁকির নিচে পুঁতে দেওয়া হয়। এরপর ঢেঁকির সামনের অংশে যেখানে চাল দেওয়া হয়, সেখানে বসানো থাকে একটি লোহার গোলাকৃতি "গড়"। তার নিচে বসানো থাকে একটি পাথর। গড়ের চারপাশ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। ঢেঁকির মুখের অংশ সোজা গিয়ে পড়ে ওই গড়ে। সহজেই চাল গুঁড়ো হয়ে যায়। ঢেঁকির ওজন যত বেশি হয়, ততই তাড়াতাড়ি চাল গুঁড়ো হয়ে যায়। প্রথমে চাল ভিজিয়ে নেওয়া হয়। কিছুটা নরম হয়ে যাওয়ার পর তারপর গড়ে দেওয়া হয়। ঢেকির অপরপ্রান্তে পা দিয়ে চাপ দিলেই সামনের অংশ গড়ে গিয়ে পড়ে। এভাবেই চাল গুঁড়ো করা হয়। এরপর সেখান থেকে গুঁড়ো চাল তুলে চালুনিতে চেলে নিলেই হল। 

এখনও গ্রামের বহু মানুষ ঢেঁকি পছন্দ করেন। আঙুর সাঁতরা বলেন, সারা বছর ঢেঁকি তোলা থাকে আর পৌষ সংক্রান্তি এলেই পাতা হয়। অনেক পুরনো এই ঢেঁকি। শাশুড়ির কাছে তিনি শুনেছেন তাঁদের বাড়িতে প্রায় ৬০ থেকে ৬৫ বছরের পুরোনো ঢেঁকি। পৌষ সংক্রান্তি এলেই বাড়িতে গ্রামের অনেক মহিলা ঢেঁকিতে চাল ভাঙতে আসেন। সবাই একসঙ্গে চাল ভাঙা হয়। হাসি আর গল্প করতে করতে চাল ভাঙার কাজ চালানো হয়। আজও আঙুর সাঁতরার মতো অনেকেই মনে করেন সেই চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি সরা পিঠে, পুলি পিঠে, ভাজা পিঠের স্বাদই হয় আলাদা। মেশিনে ভাঙা চালের গুঁড়োর ব্যবহার করলে সেই স্বাদ পাওয়া যায় না। ঢেঁকির চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি পিঠের স্বাদও আলাদা হয়। 

একই কথা বলেছেন ওই গ্রামের পূর্ণিমা প্রামানিক। তিনি বলেছেন, ছোট বেলায় তিনি দেখেছেন সারা রাত ধরে চাল কোটা হত। গ্রামের বিভিন্ন পাড়া থেকে মানুষ এসে ঢেঁকিতে চাল কুটতো। ঢেঁকি বন্ধ হত না, সবসময় চলত। এতটাই ভিড় হত, যে চাল কোটার লাইন পড়ে যেত। তবে আগের থেকে এখন অনেক কমে গেছে। অনেকেরই শরীরে সমস্যা রয়েছে, তাই অনেকেই মেশিনে চাল ভাঙিয়ে নিয়ে আসেন। তিনি মনে করেন, পরবর্তী সময়ে নতুন প্রজন্ম হয়তো ঢেঁকি কী জিনিস তা জানতে পারবে না। বর্তমানে গ্রামে শুধুমাত্র সাঁতরা বাড়ি ছাড়া আর কোনও বাড়িতে ঢেঁকি দেখা যায় না। দেখা যায়। এটাই ওই গ্রামের ঐতিহ্য।
ছবি: পার্থ রাহা


নানান খবর

এবার রুপো বন্ধক রেখেও মিলবে ঋণ, জেনে নিন খুঁটিনাটি

হ্যালোউইনের সন্ধ্যায় ‘সবথেকে মিষ্টি ভ্যাম্পায়ার’-এর সন্ধান দিলেন আয়ুষ্মান, দেখলে মন গলবে আপনারও

কলকাতায় ম্যানহোল থেকে পচা গলা দেহ উদ্ধার! ঘটনা ঘিরে চরম চাঞ্চল্য, আতঙ্কে এলাকাবাসী

স্ত্রীর প্রসবের সময়ে এ কী কাণ্ড? হাসপাতালেই মামাকে পিটিয়ে মারল যুবক, হাড়হিম ঘটনা এই শহরে

কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে সুমন মৈত্রর 'অ২', ছবিতে ঋত্বিক-যোগ প্রসঙ্গে কী জানালেন পরিচালক?

ভারত জিতলে জেমাইমার গিটারের সুরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে গান গাওয়ার আবদার জুড়লেন সানি

ছিলেন ক্রিকেটার, অধিনায়ক ও সাংসদ, এবার মন্ত্রীও হয়ে গেলেন আজহার

গর্ভাবস্থায় অ্যালকোহল সেবনের ফল মারাত্মক, পরিবর্তনে হতে পারে শিশুর মস্তিষ্কের রসায়নের

রণবীরের স্ত্রী হয়েও কাপুর পরিবারে একঘরে আলিয়া? এক পোস্টে তোলপাড় চারদিক, শুরু নয়া বিতর্ক

বাঙালিয়ানাকে দৃঢ়ভাবে হাতিয়ার করেই বদলাচ্ছে ‘হইচই’, ‘বোল্ডলি বাঙালি’-র উদ্যোগে সামিল কোন কোন তারকা?

সোনামণিকে 'স্পেশাল' তকমা দিলেন প্রতীকের মা! খুব তাড়াতাড়িই প্রেম পরিণতি পেতে চলেছে জুটির?

‘‌কোচের একটা কথাই বদলে দিয়েছিল মানসিকতা’‌, অকপট হরমন

ধস নামালেন জস, মেয়েদের ইতিহাস গড়ার পরের দিনই অস্ট্রেলিয়ার কাছে ল্যাজেগোবরে হল টিম ইন্ডিয়া

পাকিস্তানের পাশে চীন, সমস্যায় পড়তে পারে ভারত

ভারত–অস্ট্রেলিয়া সেমিফাইনালে রেকর্ডের ছড়াছড়ি, জেমাইমাই গড়লেন একগুচ্ছ নজির 

হ্যালোইনের ভূতে কলকাতা কাঁপে! বিদেশি হুল্লোড় শিশুমনের আলো না আঁধার?

এখনও কাপ পাননি সূর্যরা, এরই মধ্যে আরও একটি এশিয়া কাপ চলে এল

ভারতের কাছে হারের পরেই অবসরের ইঙ্গিত অজি অধিনায়কের

যে মেয়েটা বিয়ে না করে ফুটবলার হতে চায়, তার চোখে সন্ধ্যাতারা হয়ে ফুটুন জেমাইমা

‘ইন্ডাস্ট্রির বৃহত্তর স্বার্থের জন্য নিজের স্বার্থের কথা ভাবলে চলে না’ বড়দিন থেকে নিজের ছবি পিছনো নিয়ে আর কী বললেন শিবপ্রসাদ?

সলমনের 'ভয়ে' কেন পিছু হটেছিলেন প্রভাস? এবার 'মঞ্জুলিকা' হবেন অনন্যা পাণ্ডে?

সপ্তাহান্তে ফের যানজটের আশঙ্কা, বন্ধ থাকছে দ্বিতীয় হুগলি সেতু, নির্দেশিকা জারি কলকাতা পুলিশের

৬ কিমি বেগে হাঁটতে হবে, তার নীচে হলেই গুনতে হবে জরিমানা, অদ্ভূত নিয়ম চালু করল ইউরোপের এই দেশ

দুটি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে তিনটি পৃথিবী, সামনে এল অবাক করা আবিষ্কার

সোশ্যাল মিডিয়া